মাতৃত্বকালীন ব্রেস্ট সমস্যার প্রতিকার

মাতৃত্বকালীন ব্রেস্ট সমস্যার প্রতিকার (SOME DISEASES OF THE BREAST )

স্ত্রীরোগের মধ্যে ব্রেষ্টের রোগ অন্যতম। ব্রেষ্টে ব্যথা হয়, বেদনা থাকে, আব হয়, ঠুনকো রোগ, দুধ কম বা বেশী, স্তনের বোঁটায় ঘা ও যন্ত্রণা, স্তনে ফোঁড়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে। এসব রোগ হলে প্রসূতির কষ্ট তো হয়ই, সেই সঙ্গে শিশুটিরও কষ্ট কম হয় না। প্রসবকালের লক্ষণ, করণীয় ও হোমিও চিকিৎসা ।

কষ্ট-জনিত কারণে মা শিশুকে ঠিকমত দুধ খাওয়াতে পারে না, ফলে শিশুকে নির্ভর করতে হয় অন্য দুধের ওপর। যে মাতৃদুগ্ধ শিশুর বাঁচার প্রধান অবলম্বন তা থেকে সে বঞ্চিত হয়। এ রোগ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করিয়ে আরােগ্য করানাে দরকার ; নতুবা শিশুর স্বাভাবিক জীবন যেমন ব্যাহত হয় তেমনি হয় মায়ের কষ্ট ও শারীরিক যন্ত্রণা। 

ব্রেস্টে কম দুধঃ

সাধারণতঃ প্রসবের পর ২০ ঘন্টার মধ্যে স্তনে দুধ আসে। তা যদি না হয় বুঝতে হবে কিছু একটা গােলমাল ঘটেছে।

  • এ অবস্থায় যে ওষধ খাওয়ালে ভালাে ফল পাওয়া যাবে তা হলাে—অ্যাগ্লাস ক্যাক্টাম ৩x।
  • মনমরা হবার কারণে দুধ কম হলে—পালসেটিলা ৬।
  • শােকের জন্য দুধ কম হলে—ইগ্নেসিয়া ৬।
  • ভয়ের জন্য দুধ কম হলে—অ্যাকোন ৩।
  • রাগের জন্য দুধ কম হলে ক্যামােমিলা ৬।
  • হঠাৎ দুধ কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে—অ্যাসফিটিডা ৩। 

ব্রেস্টে বেশী দুধঃ

স্তনে দুধ এতাে বেশী হয় যে শিশু খেতে পারে না, মখ দিয়ে টানতে অসুবিধা বােধ করে। এ অবস্থায় মসুর ডাল বেটে স্তনের ওপর মােটা করে প্রলেপ দিয়ে রাখলে স্তনের দুধ কমে যায়।

  • দুধ বেশী হলে রােগিনীকে খাওয়ানাে দরকার—পালস ৩ বা নেট্রাম সালফ ১২x চূর্ণ। 

ব্রেস্টে আবঃ

আবটা শক্ত না নরম তা দেখা দরকার।

  • যদি খুব শক্ত হয়, তাহলে খাওয়ানাে দরকার ক্যালকেরিয়া ফ্লোরিকা ৩।
  • সাধারণ আবে থুজা ৩০।
  • সেই সঙ্গে বাইরে প্রলেপ দিতে হবে। প্রলেপের ওষুধ—থুজা ।
  • আর যদি পুরনাে হয়—ফাইটোলাক্কা ৩x। এ
  • ই সঙ্গে বাইরে ওষুধ মিশিয়ে জলপটি দেওয়া দরকার ওষুধ—ফাইটোলাক্কা । সামান্য জলের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে জলপটি দিতে হবে। 

ব্রেস্টে ফোঁড়াঃ

শরীরের যে-কোনাে স্থানে ফোড়া হতে পারে। স্তনেও ফোড়া হয়। ফোড়া হবার আগে স্তন শক্ত, লাল ও বেদনাযুক্ত হয়। তারপর সামান্য ফুলে ওঠে। পরে ঐ ফোলা-স্থানটাই ফেঁড়ার আকার নেয়। যথা নিয়মে ফোঁড়া পাকে, ফাটে ও পুঁজ-রক্ত বের হয়।

  • প্রথম অবস্থায় অর্থাৎ স্তন শক্ত, লাল ও বেদনাযুক্ত হলে—বেলেডােনা ৩x।
  • ফোড়ায় পুঁজ জন্মালেহিপার সালফার ৬।
  • ফেঁড়ায় যদি নালী ঘা দেখা দেয় তাহলে সিলিকা ৩০। 

ব্রেস্টে ব্যথা ও বেদনাঃ

ব্যথা ও বেদনা এক জিনিস নয়। ব্যথা হলে আঙুল বা কিছু ঠেকালে লাগে, বেদনায় সব সময়ই টন-টন করে।

  • ঋতুর আগে স্তনে বেদনা হলে— কোনায়াম ৬।
  • বাম স্তনে বেদনা হলে—সিমিসিফিউগা ৩x।
  • ডান ব্রেস্টে বেদনা হলে –স্যাঙ্গুইনেরিয়া ৩x।
  • স্তন ফুলে উঠে বেদনায়—ব্রায়োনিয়া ৩।
  • ব্রেস্টের বোঁটার আগা থেকে কাঁধ পর্যন্ত বেদনায়—ক্রোটোম-টিগ্লিয়াম ৩।
  • সন্তান ব্রেস্ট টানলে ব্যথা অনুভূত হলে–ফিলপ্যানড্রিফম ৩x।
  • শুনে গরম জলের সেঁক দিলে রোগিনী কিছুটা আরাম বোধ করে। 

ব্রেস্ট বড় হয়ে যন্ত্রণাঃ অনেক সময় নারীর স্তন বড় হয়ে ওঠে।

  • এ অবস্থায় যন্ত্রণা হলে—ব্রায়োনিয়া ৩ বা বেলেডোনা ৩x।
  • যদি শূল-বেদনার মতো অনুভূত হয় তাহলে দিতে হবে—কোনায়াম ৩। 

ঠুনকো রোগঃ

স্তন লাল হয়, জ্বালা করে, ব্যথা হয়, পুঁজ জমে ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। লক্ষণ দেখে ওষুধ দেওয়া উচিত।

  • জ্বর, শীত, ব্রেস্টে ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণে—অ্যাকোন ৩।
  • ব্রেস্ট লাল হয় ও জ্বালা করে লক্ষণে—বেলেডোনা ৬ বা ব্রায়োনিয়া ৬।
  • ব্রেস্টে পুঁজ হবার লক্ষণ দেখা গেলে—মার্ক-সল ৬।
  • ব্রেস্ট যদি শক্ত হয়ে ওঠে ও পুঁজ হবার লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে দিতে হবে—ফাইটোলাক্কা ৬।
  • ব্রেস্টে পুঁজ হয়েছে বুঝলে, টন-টন করতে থাকলে—হিপার সালফ ৬। 

ব্রেস্টের বোঁটায় ঘাঃ

ঘা হলে অল্প-বিস্তর প্রদাহ হয়ে থাকে।

  • আঘাত-জনিত কারণে এ-রকম হলে—আর্নিকা ৩।
  • একই সঙ্গে জলের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে প্রলেপ দিলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। প্রলেপের ওষুধ—আর্নিকা ৪।
  • ব্রেস্টের বোঁটায় ঘা হলে ও যন্ত্রণা হতে থাকলে—হাইড্রাষ্টিস ৩।
  • একই সঙ্গে জলের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে স্তনে লাগালে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। লাগাবার ওষুধ— হাইড্রাষ্টিস ৪।
  • ৮ গুণ জলের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে ঘায়ের ওপর ও চারপাশে লাগতে হবে। 

ব্রেস্ট কঠিন বা শক্তঃ

স্তন কঠিন হবার প্রধান কারণ দুধ জমে যাওয়া। সন্তান বেশীক্ষণ দুধ না খেলে এ রকম হয়।

  • এ অবস্থায় প্রদাহ হয় ও টন-টন করতে থাকে। প্রদাহ হলে ও টন-টন করলে—ব্রায়োনিয়া ৬।
  • পাথরের মতো শক্ত হয়ে উঠলে— কোনায়াম ৬। 
শেয়ার করে ভালবাসা দেখান

2 Replies to “মাতৃত্বকালীন ব্রেস্ট সমস্যার প্রতিকার”

Leave a Reply