গর্ভকাল, প্রসবকাল ও প্রসবের পরবর্তী কয়েকটি রােগের চিকিৎসা
গর্ভকাল, প্রসবকাল – সঙ্গমের ফলে গর্ভসঞ্চার হয়ে থাকে। পুং-শুক্রকীট স্ত্রী-ডিম্বকোষের সঙ্গে মিলিত হলে জরায়ুমধ্যে গর্ভসঞ্চার হয়। এ অবস্থায় ঋতু বন্ধ হয়ে যায়, খাদ্যে অরুচি দেখা দেয়, গা বমি-বমি করে। সর্ভসঞ্চার হলে অর্থাৎ ঋতু বন্ধ হলেই তলপেট ও স্তন ক্রমশঃ বড় হতে থাকে, স্তনের বোঁটার চারপাশে কালাে দাগ পড়ে, স্তনে পাতলা দুধ আসে প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়। গর্ভ চার-পাঁচ মাসের হলে পেটে ভূণের নড়াচড়া টের পাওয়া যায় ; তলপেটে কান রাখলে ডুণের হৃৎস্পন্দন অনুভব করা যায়।
ভ্রূণ গর্ভে থাকে মােট ২৮০ দিন। গর্ভের শুরু থেকে প্রসবের দিন পর্যন্ত। সময়কে ‘গর্ভাবস্থা’ বলা হয়। গর্ভাবস্থায় যে-সব রােগ হয় চিকিৎসা দ্বারা সে সব সারিয়ে ফেলা দরকার, নতুবা গর্ভিনী ও শিশু উভয়ের পক্ষেই ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এই অবস্থার রােগসমূহকে ‘রােগ’ না বলে রােগের উপসর্গ’ বলাই ভালাে। এগুলি হলাে গর্ভাবস্থা চলাকালীন বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া—আলাদা কোনাে রােগ। নয়। কোষ্ঠবদ্ধতা, উদরাময় প্রভৃতি রােগকেও এক্ষেত্রে রােগ হিসাবে না ধরে ‘উপসর্গ হিসাবেই ধরা উচিত—কেননা, গর্ভসঞ্চারের জন্যই এসব হয়ে থাকে।
এই সব উপসর্গের চিকিৎসা- প্রণালী এখানে বলা হচ্ছে।
বমি বা বমি বমি ভাবঃ
পায়খানা শক্ত হয়, হিক্কা ওঠে, ঢেকুর ওঠে, মুখ দিয়ে জল ওঠে, পিত্ত-অম্ল বা শ্লেষ্ম-বমি হয়।
- বমি-বমি ভাব প্রভৃতি লক্ষণে—নাক্সভমিকা ৬।
- যদি বমি বেশী হয় বা বারবার হয়—ইপিকাক ৬।
- খাওয়ার পরে যদি বমি হয়—আর্সেনিক ৩০ বা পালস ৬।
- আক্ষেপ ও বমি একসঙ্গে থাকলে—সিরিয়াস অক্স ৬।
- গর্ভাবস্থায় যে-কোনাে ধরনের বমিতে বা বমি-বমি ভাব দেখা দিলে দেওয়া চলে—সিম্ফরি কার্পাস বেসিমােটা 3x-২০০।
মুখ দিয়ে জল ওঠাঃ
- অম্ল ঢেকুর সহ মুখ দিয়ে জল উঠলেকার্বোভেজ ৩০ বা ক্যালকেরিয়া কার্ব ৬।
- কোষ্ঠবদ্ধতা, বুক জ্বালা, অরুচি ও মুখ দিয়ে জল ওঠা লক্ষণে—নাক্সভমিকা ৩০।
- যে-কোনাে ধরনের মুখ দিয়ে জল ওঠায় দেওয়া চলে—মারকিউরিয়াস ৬।
মাথা ঘােরা ও মাথা ধরাঃ
গর্ভাবস্থায় অনেকরই মাথা ঘােরে বা মাথা ধরে। এই উপসর্গের সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। ঠিকমতাে উপসর্গগুলি মিলিয়ে ওষুধ দেওয়া দরকার।
- কানের ভেতর ভোঁ-ভোঁ শব্দ, চোখ মুখ লাল ও তৎসহ মাথা ধরলে–বেলেডােনা ৬।
- কপালের বামদিক, ডানদিক বা উভয়দিক ধরলে—পালস্ ৬।
- মাথায় থেকে থেকে চিড়িক-মারা বেদনা যন্ত্রণায়নাক্সভমিকা ৩০।
- চোখের কোণে কালাে দাগ পড়ে এবং সেই সঙ্গে মাথা ঘােরা লক্ষণে—অ্যাকোন ৬।
বুক জ্বালাঃ
- গর্ভাবস্থায় অম্লরােগের জন্যই সাধারণতঃ বুক জ্বালা করে, এরূপ লক্ষণেক্যালকেরিয়া কার্ব ৬।
- এই অবস্থায় যে-কোনাে কারণে বুক জ্বালা করলে দেওয়া চলেক্যাপসিকাম ৬ বা পালস ৬।
পেট কনকনানিঃ
- যে-কোনাে ধরনের পেট কনকনানিতে দেওয়া চলেনাক্সভমিকা ৬ বা ক্যামােমিলা ১। মাত্র ১ মাত্রা সেব্য।
উদরাময় ও পেট ব্যথা ও তার সঙ্গে উদরাময়েঃ
- উদরাময় ও পেট ব্যথা ও তার সঙ্গে উদরাময়ে—নাক্সভমিকা ৬ বা পালস৬।
- ব্যথা-বেদনাহীন উদরাময়ে—চায়না ৬।
- উদরাময় সহ আম দৃষ্ট হলে—মারকিউরিয়াস ৬।
- পেট জ্বালা, তৃষ্ণা ও সেই সঙ্গে উদরাময়ে আর্সেনিক ৬।
কোষ্ঠবদ্ধতাঃ
- কোষ্ঠবদ্ধতা ও পায়খানা এতাে কষে যায় যে কিছুতেই মল বের হতে চায় , বমি-বমি ভাব থাকে, অতিকষ্টে সামান্য শক্ত মল বের হয় প্রভৃতি লক্ষণে নাক্সভমিকা ৬।
- যে-কোনাে ধরনের কোষ্ঠবদ্ধতায় কলিনসােনিয়া ৩x৷
খিল ধরাঃ
- গর্ভাবস্থায় বেশির সময় খিল ধরে পায়ে ও ঊরুতে। এ অবস্থায় খাওয়ানাে দরকার ক্যামােমিলা ৬।
- পেট ফাঁপা ও তার সঙ্গে খিল ধরা লক্ষণে—লাইকোপডিয়াম ৩০।
বুক ধড়ফড় করাঃ
- সাধারণতঃ অজীর্ণতার কারণেই গর্ভাবস্থায় বুক ধড়ফড় করে থাকে। এক্ষেত্রে ওষুধ দিতে হবেনাক্সভমিকা ৬।
- যে-কোনাে কারণে বুক ধড়ফড় করলে—ডিজিটেলিস ৩।
প্রস্রাব বন্ধঃ
- প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলেও কোনাে কারণে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে কিম্বা সামান্য পরিমাণে প্রস্রাব হলে—বেলেডােনা ৬ বা ক্যান্থারিস ৬।
অসাড়ে প্রস্রাব হলেঃ
- রাত্রিকালে ঘুমােতে ঘুমােতে অসাড়ে প্রস্রাব করে ফেলে অনেকে। এটি গর্ভাবস্থার একটি উপসর্গ। এ রকম ঘটলে খাওয়ানাে দরকার—সালফার ৩০ বা কষ্টিকম ৩০। প্রস্রাবের বেগ ধারণ করা সম্ভব হয়।
- , ফেঁটা-ফোটা প্রস্রাব প্রভৃতি লক্ষণে—বেলেডােনা ৬।
প্রস্রাবে যন্ত্রণা থাকলেঃ
- গর্ভাবস্থায় এই উপসর্গটি অনেকের দেখা দেয়; এক্ষেত্রে দেওয়া উচিত—ক্যান্থারিস ৬ বা স্পিরিট ক্যাম্ফার।
গর্ভাবস্থায় রজঃ
- নিঃসরণ ও গর্ভসঞ্চার হলে ঋতু বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ব্যতিক্রম হিসাবে যদি কোনাে কারণে রজঃ নিঃসরণ ঘটে তাহলে দিতে হবে ফসফরাস ৬ বা ককিউলাস ৬।
অনিদ্রা বা কম নিদ্রাঃ
- নিদ্রা না হলে অথবা নিদ্রা খুব কম হলে কফিয়া হােমিওপ্যাথিক চিকিৎসা—১২ ।
- না হলে—ভিরেট্রাম অ্যালবাম ৬ ।
- বেদনার জন্য বা খিল ধরার জন্য এ রকম হলে—অ্যালবাম ৬ বা ক্যামােমিলা ৬।
বেদনা-জনিত কষ্টবােধঃ
- ভ্রূণের নড়াচড়ার কারণে এ রকম হলে- কোনায়াম ৬ বা আর্নিকা ৩।
- হৃৎপিণ্ডে বেদনাবােধ হলে-আর্জ-মেট -৬ ।
কাশি হলেঃ
- গর্ভাবস্থায় কাশি হতে থাকলেনাক্সভমিকা ৬ বা অ্যাকোনাইট ৩।।
খাদ্যে বিকৃত ধরনের রুচিঃ
- পােড়া মাটি, হাঁড়ি-কলসী ভাঙার টুকরো প্রভৃতি খাবার ইচ্ছা হলে কার্বোভেজ ৬।
- খড়িমাটি খাবার ইচ্ছা হলে ক্যালকেরিয়া কার্ব ৬।
- গাছের পাতা, কঁাচা শাক, কাঁচা আনাজ প্রভৃতি খাবার ইচ্ছা হলে কার্বোভেজ ৩০।
অর্শ রােগঃ
- যদিও এটি রােগ তথাপি গর্ভাবস্থায় এটিকে উপসর্গ হিসাবে ধরা হয়। এর ওষুধ—নাক্সভমিকা ৬।
- এই অবস্থায় পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে। বা অতিকষ্টে সামান্য পায়খানা হলে দিতে হবে কলিনসােনিয়া ৩x৷
পিঠে ও কোমরে বেদনাঃ
- উভয় জায়গায় বা কোনাে এক জায়গায় বেদনা হলে—সিপিয়া ৩০ বা ব্রায়ােনিয়া ৩৷
শােথ হলেঃ
- শােথ হলে আক্রান্তস্থলে ঝিন-ঝিন করে বা অসাড় মনে হয়। গর্ভাবস্থায় স্ত্রী-জননতন্ত্রে, পায়ে বা ঊরুতে এ উপসর্গটি দেখা দেয়। জ্বর-সহ এ রকম হলে—অ্যাকোন ৩ (প্রথমে), আর্সেনিক ৬ (পরে)।
- রসরক্তক্ষয়ের জন্য হলে—ফেরামফস ৬ বা চায়না ৬।
গর্ভাবস্থায় মূছাঃ
- স্নায়বিক দুর্বলতা, রসরক্তক্ষয় প্রভৃতি কারণে এ রকম হয়ে থাকে। স্নায়বিক দুর্বলতার জন্য মূৰ্ছা গেলেঅ্যাসিড ফস ৬।
- শােক দুঃখের কারণে মূৰ্ছা গেলে—ইগ্নেসিয়া ৬।
- রসরক্তক্ষয়ের জন্য মূছা গেলে—চায়না ৬।
- যদি গর্ভাবস্থায় মূৰ্ছা হয় এবং সেই সঙ্গে আক্ষেপ থাকে তাহলে দিতে হবে-কিউম ৬।
এ ধরনের রােগে চোখে-মুখে ঠাণ্ডা জলে ঝাপটা দিলে উপকার হয়। স্পিরিট ক্যাম্ফার বা মস্কাস শোঁকালেও কাজ হয়।
গর্ভাবস্থায় দাঁতের বেদনাঃ
- গর্ভিনীর যদি জ্বর হয় ও তার সঙ্গে দাঁতের ব্যথা দেখা দেয় তাহলে দিতে হবে—অ্যাকোন ৩।
- স্নায়বিক উত্তেজনার কারণে দাঁতের ব্যথায়—মারকিউরিয়াস ৬ বা ক্রিয়ােজোট ৬।
- অজীর্ণতা-দোষে দাঁতের ব্যথায়—পালস ৬।
- গর্ভিনীর দাঁতের যন্ত্রণা যে কারণেই হােক, সব অবস্থায় দেওয়া চলে—ম্যাগ্নেসিয়াকার্ব ৬।
গর্ভপাত (Abortion) :
- আমাদের গর্ভপাত বা অকাল প্রসবের কারণ ও প্রতিকার লিখাটি পড়ুন।
গর্ভপাতের পরবর্তী অবস্থাঃ
গর্ভপাতের পর বিপদ কেটে গেল, একথা ভাবা ভুল। বরং বিপদের আশঙ্কা বেশী দেখা দিন অবস্থায় পর্যবেক্ষণ করা দরকার। দেখা দরকার তার ফল পস বেশীদিন ধরে পড়ছে কি না ইত্যাদি।
- ফুল পড়তে দেরি হলে এ সিকেলি ৩০।
- বেশী দিন ধরে (কয়েক সপ্তাহ) রক্ত পড়তে থাকতে ৬।
প্রসুতিকে এরকম অবস্থায় বেশ কিছুদিন বিশ্রামে রাখা দরকার।
প্রসবকালঃ
- প্রসবকালের লক্ষণ, করণীয় ও হোমিও চিকিৎসা পোষ্টটি পড়ে নিয়ে বিস্তারিত জানুন।
যোনিমুখের ছিন্নতাঃ
প্রসবকালে যােনিমুখে অল্প-বিস্তর ছিড়ে যায়। এতে ভয় পাবার কিছু নেই। বেশির ভাগ প্রসূতির ক্ষেত্রেই এমন হয়ে থাকে। এ অবস্থায় কোনাে ওষুধ খাওয়াবার দরকার নেই, তবে ওষুধ লাগানাে দরকার। লাগাবার ওষুধ ক্যালেণ্ডুলা মাদার টিংচার । অল্প জলের সঙ্গে সামান্য ওষুধ মিশিয়ে ন্যাকড়া বা তুলাে ভিজিয়ে পটি দিয়ে রাখলে উপকার হয়।
ফুল পড়ার পরে ব্যথাঃ
ফুল পড়ার পরে একটা ব্যথা অনুভূত হয়, একে বলা হয় ‘হেতাল ব্যথা। ফুল পড়বার পরে জমাট রক্ত বের হবার সময় এমন হয়। দু’দিন বা ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই ব্যথা কমে যায়। কিন্তু যদি না কমে তাহলে ওষুধ খাওয়ানাে দরকার।
- এ অবস্থার ওষুধ—আনিকা ৩০।
- এতে কাজ না হলে—সিকেলি ৩০ বা জেলসিমিয়াম ৩x
প্রসবের পরে রক্ত পড়াঃ
ফুল পড়ার পর থেকে ৩ সপ্তাহ ধরে জরায়ু থেকে একটু একটু রক্ত পড়ে। একে বলে ‘রক্তডাঙ্গা’। প্রথম ২ দিন টকটকে লাল রক্ত, তারপর হলদে রঙের ও শেষে জলের মতাে পাতলা স্রাব হয়। সাধারণতঃ এইভাবেই রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ যদি না হয় তাহলে ওষুধের ব্যবস্থা করা উচিত।
- বেশী দিন ধরে এ রকম হতে থাকলে—স্যাবাইনা ৩০ বা সিকেলি ৩।
- লাল টকটকে রক্ত পড়লে—ইপিকাক ৩x।
- রক্তস্রাব যদি বেশী পরিমাণে হয় তাহলে দিতে হবেক্যালকেরিয়া কার্ব ৬।
- রক্ত পড়া যায় বেশী পরিমাণে হয় তাহলে দিতে হবে ক্যালকেরিয়া ৬x।
- হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দেওয়া দরকার—অ্যাকোন ৩x।
- সব ওষুধ ব্যর্থ হয় তাহলে দেওয়া উচিত—সালফার ৩০।
ওষুধ দ্বারা প্রতিদিন স্ত্রী ধুয়ে ফেলা দরকার। ওষুধক্যালেণ্ডুলা মাদার টিংচার| জলের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০ গুণ জল ব্যবহার করা উচিত।
প্রসবের পরে রক্তস্রাবঃ
প্রসবের সময় বেশী রক্ত পড়ে না, কিন্তু পরে রক্ত পড়ে বেশী পরিমাণে। এ রকম অবস্থা হলে প্রসূতির জীবন-সংশয় দেখা দিতে পারে।
- এক্ষেত্রে খাওয়ানাে দরকার—স্যাবাইনা ৩x , হামাস ৩x বা ইপিকাক ৩x। যে-কোনাে একটি ওষুধ সেব্য।
- অতিরিক্ত রক্তস্রাবের জ যদি রােগিনী অবসন্ন হয়ে পড়ে তাহলে দেওয়া উচিত—চায়না ৬।
প্রসবের পরে মূৰ্ছাঃ
অনেক সময় প্রসূতির প্রসবের পরে মুছা হয় । অনেকের আবার প্রসবকালের আগে মূৰ্ছা হয়। এ সময়ে মুছা খুবই আশঙ্কাজনক। অনতিবিলম্বে চিকিৎসা করানাে দরকার। কি কারণে মূছা হচ্ছে। তা ভালাে করে জেনে নিয়ে ওষুধ প্রয়ােগ করা উচিত। ঠিকমত ওষুধ প্রয়ােগ করলে রােগটা সেরে যেতে পারে।
- আঘাত লাগার জন্য এমন হলে—আর্নিকা ৩।
- ভয় পেয়ে মূছা হলেকফিয়া ৬।
- মূছা ও তৎসহ হিমাঙ্গ অবস্থা হলে—বেরিনীর ক্যাম্ফার।
- বক্ষস্থলে চাপ-বােধ ও তৎসহ মূৰ্ছা হলে —পালসেটিলা ৬।
- ঘন-ঘন মূছা, মূছা দীর্ঘস্থায়ী হলে-স্ট্যামােনিয়াম ৩x |
- রক্তস্রাব-জনিত কারণে মূছা হলে—“চায়না ৬।
প্রসবের পরে আক্ষেপঃ
অনেক নারীর প্রসবের পরে খেচুনি বা আক্ষেপ দেখা দেয়। ধনুষ্টংকারের রােগীর মতাে সারা শরীরে বা শরীরের কোনাে কোনাে অংশে এ ধরনের খেঁচুনি হতে পারে। রােগটা খুবই ভয়ের। ঝিমিয়ে পড়া, হাত পায়ে খিল ধরা, দৃষ্টিশক্তি হাস পাওয়া, মাথা ধরা, কথা জড়িয়ে আসা, টে। মুখ লাল হওয়া, পেটে বেদনা, তন্দ্রা-ভাব, অস্থিরতা, প্রবল জ্বর, পিপাসা, কাঁপুনি জ্বরায়ুতে বেদনা প্রভৃতি অন্যান্য লক্ষণ। লক্ষণ বুঝে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করে রােগীকে খাওয়ালে আরােগ্যলাভ করে সত্বর। এ রােগের প্রথম অবস্থায় জ্বরও হতে পারে। মাথা ভারী বা মাথার মধ্যে দর্প-দপ করতে পারে। চিকিৎসককে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চালাতে হবে।
- মাথার রোগ, চোখ-মুখ লাল, অস্থিরতা, স্তনে দুধ থাকে না বা কম থাকে প্রভৃতি লক্ষণে – বেলেডোনা ৩x।
- তন্দ্রাভাব-সহ খেঁচুনিতে—জেলসিমিয়াম ১x।
- জরায়ু-প্রদাহ, সান্নিপাতিক জ্বর, দীর্ঘস্থায়ী দুর্গন্ধ স্রাবে—রাসটক্স ৬।
- পেট ফাঁপা সহ রোগ হলে—কালোসিন্থ ৬।
- ভয়ের জন্য রোগ হলে—ওপিয়াম ৬।
- পেট-বেদনা সহ রোগ হলে ল্যাকেসিস ৬।
- দূষিত রক্তের কারণে খেঁচুনি হলে – পাইরোজেন ৬-২০০।
- জরায়ুর রোগ জনিত কারণে এ রকম হলে —নাক্সভমিকা ৩০।
- জ্বর, পিপাসায় শীত, কাঁপুনি, গা শুকনো, জরায়ুতে বেদনা সহ খেঁচুনিতে—ভিরেট্রাম ভিরিভি ১ বা অ্যাকোন ৩x।
সূতিকা রোগঃ
এ রোগটা হয়ে থাকে রক্তাল্পতার কারণে। ঘুসঘুসে জ্বর, উদরাময়, রক্তহীনতা, শোথ প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিলেই বুঝতে হবে রোগটা ‘সূতিকা’। এ ধরনের রোগিনীকে শিঙ্গি মাছের ঝোল ও লঘু পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াতে হবে। পাতলা করে গরম দুধও খাওয়ানো চলতে পারে। কোনো প্রকার গুরুপাক বা উত্তেজক খাদ্য খাওয়ানো রীতিমত ক্ষতিকর।
- এ রোগের ওষুধ— ফেরাম-ফস ৩০ বা ক্যালকেরিয়া ফস ৩।
আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক করে আপডেট থাকতে ক্লিক করুন