প্রসবকালের লক্ষণ, করণীয় ও হোমিও চিকিৎসা

প্রসবকালের লক্ষণ, করণীয় ও হোমিও চিকিৎসাঃ

প্রসবকালের লক্ষণঃ

গর্ভসঞ্চার ও প্রসবকালের মধ্যবর্তী সময় মোট ২৮০ দিন। যদি স্বাভাবিকভাবে প্রসব হয় অর্থাৎ কোনো রকম বিপত্তি দেখা না দেয় তাহলে প্রসবের ১০ দিন আগে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পাবে সেগুলো হলো-

  • তলপেট ঝুলতে শুরু করবে ও কোমর সরু হতে থাকবে।
  • কাঁকালের নীচে বেদনা দেখা দেবে।
  • বার-বার প্রস্রাবের বেগ হবে।
  • জরায়ুর আকার সামান্য বদলে যাবে।
  • জননেন্দ্রিয়ের পেশীগুলি আলগা হয়ে পড়বে।
  • বাইরের জননেন্দ্রিয় ভিজে-ভিজে মনে হবে।
  • এ সময় বমি হতে পারে বা বমি-বমি ভাব থাকতে পারে।
  • সামান্য কাঁপুনি দেখা দেবে।
  • যোনিদ্বার থেকে একটু-আধটু রস-রক্ত বের হতে থাকবে। 

প্রসবকালের লক্ষণ

প্রসবকালের করণীয়ঃ

উপরের লক্ষণগুলি দৃষ্ট হলে বুঝতে হবে প্রসবকাল আসন্ন অর্থাৎ প্রসবের আর বেশী দেরি নেই। এ অবস্থায় গর্ভিনীকে চিৎ করে শুইয়ে তার পেটের ওপর সামান্য নারকেল তেলের সঙ্গে জল মিশিয়ে আলতোভাবে মালিস করা দরকার। জননেন্দ্রিয়ের চারপাশে লাগিয়ে দিতে হবে ভেসলিন বা নারকেল তেল। 

প্রসবকালের হোমিও চিকিৎসাঃ

প্রসব-বেদনা শুরু হবার পর ৫/৬ ঘন্টার মধ্যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু তা যদি না হয় তাহলে চিকিৎসা করানো দরকার। কি কারণে প্রসবে দেরি হচ্ছে তা অনুসন্ধান করে জানতে হবে এবং গর্ভিনীকে সেই লক্ষণ বুঝে ওষুধ খাওয়াতে হবে।

  • মৃদু বেদনা ও বমি-বমি ভাব থাকলে—পালস ৩০।
  • বেদনা যদি অসহ্য হয় তাহলে দেওয়া দরকার—ক্যামোমিলা ৬ ।
  • জরায়ু-মুখ কুঁচকে আছে তাই প্রসবে কষ্ট, এ রকম লক্ষণে— জেলসিমিয়াম ৩০।
  • প্রসব-বেদনা যথার্থ না হয়ে যদি কৃত্রিম হয় তাহলে দিতে হবে—কলোফাইনাম ৩।
  • জরায়ু-মুখ ছড়িয়ে না পড়লে ও শক্ত হলে বেলেডোনা ৩০।
  • গর্ভিনীর যদি হিষ্টিরিয়া থাকে তাহলে দেওয়া উচিত—ইগ্নেসিয়া ৬।
  • মুখ-চোখ লাল, প্রলাপ, প্রচণ্ড অস্থিরতা লক্ষণে—বেলেডোনা ৩০।
  • শিশুর মাথা প্রথমে বের হবার আশঙ্কা দেখা দিলে—পালস ৩০।
  • নাড়ী ক্ষীণ, হিমাঙ্গ অবস্থা, মূর্ছা প্রভৃতি লক্ষণে -ক্যামফার ৩০।
  • খুব বেশী আক্ষেপ দেখা দিলে –হায়োসায়েমাস ৬। 
  • প্রসবের পরে ফুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয় অনেক প্রসূতির ক্ষেত্রে। যদি ১ ঘন্টার মধ্যে ফুল না পড়ে তাহলে চিকিৎসা করানো দরকার। এ রকম হলে ১৫ মিনিট পর পর খাওয়ানো দরকার—সিকেলি ৩০ বা পালস ৩০। এতে যদি কাজ না হয় তাহলে হাত দিয়ে বের করে দিতে হবে ফুলটাকে। আশেপাশের গৃহিনীদের অনেকেরই এ অভিজ্ঞতা থাকে, কাজটা তাঁদের দিয়েই করানো উচিত। কাছাকাছি ধাত্রী পাওয়া গেলে আরও ভালো হয়। আনাড়ী হাতে একাজ করতে যাওয়া মোটেই উচিত নয়।
শেয়ার করে ভালবাসা দেখান

One Reply to “প্রসবকালের লক্ষণ, করণীয় ও হোমিও চিকিৎসা”

Leave a Reply