হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়ােগের নিয়ম-নীতি

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকালে কিছু নিয়ম মানিয়া চিকিৎসা করিলে উত্তম ফল পাওয়া যায়। যা হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়ােগের নিয়ম-নীতি হিসেবে পরিগনিত।

নিম্নে তাহার মধ্যে অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ ১০টি উল্লেখ করা হইল-

হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়ােগের নিয়ম-নীতি

  1.  রােগীর জীবনীশক্তি, মানসিক লক্ষণ, রােগলক্ষণ ইত্যাদি বিচার করিয়া ঔষধ। এবং ঔষধের মাত্রা নির্ধারণ করিবেন। মুমূর্ষ রােগীকে ঝুঁকিপূর্ণ ঔষধ এবং ঔষধের উচ্চমাত্রা ব্যবহার করিতে দিবেন না। স্থানিক ও শারীরিক লক্ষণের চেয়ে ধাত তথা মানসিক লক্ষণের দিকে অধিক গুরুত্ব দিবেন।
  2. এলােপ্যাথি ও কবিরাজী চিকিৎসার পর কোন রােগী হােমিও চিকিৎসার জন্য আসিলে তাহাকে প্রথমেই নাক্সভম ৬ অথবা সালফার ৬ শক্তির দুই একমাত্র সেবন করিতে দিবেন। তাহার পর লক্ষণ অনুসারে মূল ঔষধ প্রয়ােগ করিবেন।
  3. ঔষধ ব্যবহারকালীন সময়ে চা-কফি, পান-সুপারী, কাঁচা পেয়াজ, কপুর খাওয়া ও ধূমপান নিষিদ্ধ। সুগন্ধ বা তীব্র গন্ধযুক্ত দ্রব্য বা তিক্ত পদার্থের দ্বারা। দাঁত মাজা পরিত্যাগ করিতে হইবে। পুরাতন রােগীর চিকিৎসায় ঔষধ সেবনের একঘন্টা পূর্ব হইতে পর পর্যন্ত পানাহার করা নিষিদ্ধ।
  4. রােগীর অবস্থা বুঝিয়া সময়, শক্তি ও মাত্রা পরিবর্তন করা যাইতে পারে । হােমিও মতে ঔষধের শক্তি পরিবর্তনশীল পদ্ধতিতে নিতে হইবে। নিম্ন-মধ্য থেকে উচ্চ ও উচ্চতর শক্তির দিকেই যাইবে। পুরাতন রােগে উচ্চশক্তি ব্যবহার করাই বিধিসম্মত।
  5. মেটেরিয়া মেডিকা পুস্তকে প্রত্যেক ঔষধের পরে যে শক্তির উল্লেখ করা হইল, সে শক্তি ব্যবহার না করিলে যে, কোন উপকার হইবে না তাহা নয়। রােগের লক্ষণের সহিত ঔষধের লক্ষণ মিল হইলে যে কোন শক্তিতে কাজ হইবে।
  6. রােগীর দেহে ঔষধের ক্রিয়া চলিতে থাকিলে দ্বিতীয় মাত্রা ব্যবহার করা যাইবে। যতদিন ক্রিয়া চলিবে ততদিন ধৈর্যের সহিত অপেক্ষা করিতে হইবে । ক্রিয়া শেষ হইয়াছে মনে হইলে নির্বাচিত ঔষধের পরবর্তী উচ্চশক্তি অথবা রােগী ও রােগের নতুন কোন লক্ষণ দেখা দিলে সেই মােতাবেক নতুন কোন ঔষধের পরিমিত মাত্রা ব্যবহার করিতে হইবে।
  7. রােগ লক্ষণ ও ঔষধ লক্ষণ মিলিত হইয়াও যখন নির্বাচিত ঔষধে উপকার না হয়, তখন ঔষধটির শক্তি পরিবর্তন করিয়া ব্যবহার করিলে উপকার হয়। ঔষধ | পানিতে মিশিয়ে ৬/৭ বার জোরে ঝকা দিলে কিঞ্চিৎ শক্তির পরিবর্তন হইয়া উপকার অধিক হয়। (হ্যানিম্যান)
  8. সুনির্বাচিত হইলেও প্রদেয় ঔষধটি বিশুদ্ধ না হইলে আরােগ্য সম্পন্ন হয় না। রােগীর আরােগ্য এবং চিকিৎসকের সুনাম মূলতঃ বিশুদ্ধ ঔষধের উপরই বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাই বিশ্বস্ত ও নির্ভরযােগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে ঔষধ ক্রয় করা উচিত। 
  9. ঔষধ নির্বাচনের বেলায় এবং চিকিৎসার সর্বাবস্থায় চিকিৎসককে অত্যন্ত সাহসী ও সুবিবেচক হইতে হইবে। ভয়, দ্বিধা, অস্থিরতা ও অতি আবেগ পরিহার করিতে হইবে।
  10. রােগীর চিকিৎসা করার আগে রােগীকে পরীক্ষা করিয়া রােগী-লিপি প্রস্তুত করিবেন। রােগীলিপি প্রস্তুতকালে রােগীর মন ও শরীরের সামষ্টিক লক্ষণের উপর জোর দিতে হইবে । বিশেষ লক্ষণ থাকিলে লক্ষণটিকে বিশেষ বিবেচনায় আনিতে হইবে। 
শেয়ার করে ভালবাসা দেখান

Leave a Reply